বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ ও এসডিজি-১৩ অর্জনে জাতীয় কর্মসূচি দরকার..
.
আমরা সবাই মিলে দিন দিন বিশ্বকে বসবাসের অনুপযোগী বানাচ্ছি। এমন চলতে থাকলে পৃথিবীতে মানুষের টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে যাবে। কিন্তু, আমরা চাইলেই আমাদের প্রিয় পৃথিবীকে সবুজশ্যামল, শান্তিতে, স্বস্তিতে আরামে বসবাসের জন্য একটি আদর্শ গ্রহে রুপান্তর করতে পারি। বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রতিরোধে চলমান কর্মসূচি সমূহ যথাযত পালন করে, নৈতিক ভাবে এসডিজি-১৩ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অবদান রেখে আমরা আমাদের বৈশ্বিক সমস্যা নিজেই সমাধান করতে পারি। (এসডিজি-১৩ এর বিস্তারিত শেষ অংশে)..
অসহনীয় গরম ও তীব্র তাপদাহে নানান রকম স্বাস্থ্য সমস্যা এবং প্রাকৃতিক অতিবৃষ্টি ও অনাবৃষ্টি সহ স্বাভাবিক ঋতু চক্রের মধ্যে অস্বাভাবিক পরিবর্তন সমগ্র বিশ্বের সচেতন মানুষদের দুশ্চিন্তা ও আতঙ্কের কারন হয়ে উঠেছে। এই সমস্যা থেকে কি করে রক্ষা পাওয়া যায় এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে মানব জীবন ও বিশ্বকে রক্ষ্যায় জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দেশের সংস্থা নানান কর্মসূচি দিয়েছে। কিন্তু, এইসব কর্মসূচি পালনে যথাযথ মহলের নেই তেমন আগ্রহ ও উদ্যোগ!!..
ইদানিং লক্ষণীয় যে, কোথাও অতি বৃষ্টি ও বন্যায় গ্রাম ও শহর তলিয়ে জনজীবনে কঠিন বিপর্যয় হচ্ছে, স্বাভাবিক জীবন চালনা চরম ভাবে ব্যহত হচ্ছে। মুল্যবান সম্পদ, মাঠের ফসল, গৃহপালিত পশু ও বাসস্থানের অকল্পনিয় ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।..
একই সাথে তীব্র রোদ এবং গরমের তীব্রতার সাথে সাথে বিভিন্ন রোগ এবং স্বাস্থ্যসমস্যা বাড়ছে। কোথাও কোথাও অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপদাহ এবং গরমে বন্ধ রাখতে হচ্ছে বিদ্যালয়, দৈনন্দিন রুটিন কাজ করতে গার্মেন্টস ও শিল্পকারখানার কর্মীদের গরমের চোটে শারীরিক ও মানষিক সমস্যা হচ্ছে। গ্রামের তুলনায় শহরের মানুষদের মধ্যে গরমের প্রতিক্রিয়া বেশি লক্ষণীয় হলেও গ্রামেও আজকাল তীব্র তাপদাহে শিশু সহ বয়োবৃদ্ধদের নানান দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়, তাছাড়া দিনমজুর শ্রেনীদের মধ্যে রিক্সা চালক ও অন্যান্য কর্মজীবীদের উপার্জনের জন্য তীব্র তাপদাহের মধ্যেও কাজ করতে হয়। আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে হিট স্ট্রোক, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর আসছে।..
.
তাই আমাদের সামনে বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রতিরোধে এসডিজি-১৩ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিকল্প কোনো উপায় নেই। তাই আসুন দেরি না করে এসডিজি-১৩ সম্পর্কে ভাল ধারনা নেয় এবং এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যথাযত দায়িত্ব ও ভুমিকা পালন করি!!..
এসডিজি-১৩ (SDG-13) বলতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ১৩ বোঝায়, যা ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডায় জাতিসংঘ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে একটি। এসডিজি-১৩ বিশেষভাবে জলবায়ু কর্মের উপর আলোকপাত করে। এর প্রাথমিক লক্ষ্য হল জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা এর প্রভাব মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া। জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এবং এর বিরূপ প্রভাব সীমিত করার জন্য গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করা। বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বেশি বেশি বৃক্ষ রোপণ, বনায়ন তৈরি, অতিরিক্ত বৃক্ষ কর্তন রোধ করন। সমন্বিত পরিকল্পনার পাশাপাশি বন উজাড় ও বৃক্ষনিধন রোধ, কার্বন নিঃসরণ রোধ, শিল্পদূষণ রোধ, পরিবেশদূষণ রোধে কার্যকর আইনপ্রণয়ন ও প্রয়োগ অত্যাবশ্যক। তা ছাড়া জনসেচতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে পরিবেশ দূষণরোধে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি। এই তাপদাহ কিংবা রোদের প্রখরতা কমাতে আমাদের নিয়মিত সবাইকে গাছ রোপণে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। এখন আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে বর্ষা মৌসুমে বেশি বেশি গাছ রোপণ করা। বিভিন্ন সংগঠন বছরব্যাপী চেষ্টা করে গাছ রোপণের। তবে করোনা মহামারি যেভাবে ভাইরাসের মতো দেশকে আক্রান্ত করেছে, ঠিক সেভাবে গাছ রোপণ করে সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে যদি আক্রান্ত করা যেত, তবে দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রকোপ মোকাবিলা করতে পারত। এর মাধ্যমে অতি তাপমাত্রাসহ বিভিন্ন দুর্যোগ লাঘব হবে বলে মনে করি।..
নিবন্ধ তথ্য-উপাত্তঃ.
ইঞ্জিঃ আবদুল্লাহ আল মামুন প্রধান,
জাতিসংঘ সেচ্ছাসেবক (UN Volunteer),
Email: [email protected],.
.
ডে-নাইট-নিউজ /
আপনার মতামত লিখুন: